স্বদেশ ডেস্ক:
টাঙ্গাইলে গত ছয় মাসে বারটি উপজেলায় ২০০ কোটি টাকার ১৭৫ একর সরকারি জমি উদ্ধার করেছে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে গাজীপুরে অবৈধ দখলে থাকা ৭০ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি ভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। এসব জমিতে নানা ধরনের গণমুখী কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পরিষদ।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, অবৈধ দখলদারদের দখলে থাকা সরকারি ও ‘ক’ তফসিলভুক্ত জমি অবৈধ দখলমুক্ত করে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছি মাত্র। জেলায় যোগদানের ছয় মাসের মধ্যেই ১৭৫ একর সরকারি জমি উদ্ধার করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ২০০ কোটি টাকা। তিনি আরও জানান, অবৈধ দখলমুক্ত করার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল-৫ আসনের সংসদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেন আমাদের সময়কে জানান, সবার সদিচ্ছা এবং আন্তরিকতা থাকলে সরকারি জমিগুলো বের করা সম্ভব। জেলা প্রশাসককে আমি ধন্যবাদ জানাই তার কাজে আন্তরিকতা দেখে। আর যারা সরকারি জমি কোর্টের অজুহাতে দখল করে আছেন তাদের ব্যাপারেও দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন।
এ দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৭ নং ওয়ার্ডের কোনাবাড়ী কাশিমপুর সড়ক সংলগ্ন জরুন এলাকার মীরপুর মৌজায় ৪ একর ৮১ শতাংশ সরকারি ভূমি উদ্ধার করেছে জেলা প্রশাসন। বর্তমানে যার বাজার মূল্য প্রায় ৭০ কোটি টাকা। স্বাধীনতার পর পর্যায়ক্রমে দখল হওয়া এই ভূমিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছিল ১৩’শ ঘর। ছিল দুতলা, তিনতলা বাড়িও।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সরকারি হিসেবে ১২ জন দখলদার দীর্ঘদিন ধরে এসব জমিতে স্থাপনা গড়ে তুলেছিল। প্রতি মাসে ৪০/৪৫ লাখ টাকা বাড়ি ভাড়াও আদায় করতো অবৈধ দখলদাররা। স্বাধীনতার পর এত বছর অতিক্রান্ত হলেও সরকারি এ ভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য কেউ এগিয়ে আসেননি। সম্প্রতি জায়গাটি অবৈধ দখলমুক্ত করতে উদ্যোগ নেয় গাজীপুর জেলা প্রশাসন। গত ২১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি দু’দফা অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করা হয় সব অবৈধ দখলদারদের। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বহুতল ভবনসহ অন্যান্য স্থাপনা।
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মশিউর রহমান বলেন, বিভিন্ন সময় অনেকে উদ্যোগ নিলেও অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করা যাচ্ছিল না এই ভূমি। তাই জেলা প্রশাসন সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে সরকারি এই ভূমি উদ্ধার করে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম আমাদের সময়কে বলেন, অবৈধ দখলমুক্ত সরকারি এই জমিতে নানা ধরনের গণমুখী কাজ করা হবে। সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে বিদ্যালয়, খেলার মাঠ, কবরস্থান, কমিউনিটি সেন্টার, স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য এলাকায় থাকা সরকারি ভূমিও জেলা প্রশাসনের সহায়তায় দখলমুক্ত করে গণমুখী কাজ করা হবে।